মোঃ আরিফুল হাসান, (ফরিদপুর)
ফরিদপুরে চাঞ্চল্যকর স্যুটকেসে পাওয়া মরদেহের রহস্য উদঘাটনসহ রোজিনা আক্তার ওরফে কাজল (৩২) নামে মূল আসামিকে গ্রেফতার এবং মালামাল উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় জেলা পুলিশের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জেলা পুলিশ সুপার মো. মোর্শেদ আলম জানান, গত ২৭ জানুয়ারি সকাল ৭টায় জেলার কোতয়ালী থানা সদরের গোয়ালচামট নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গোল্ডেন লাইন পরিবহনের কাউন্টার সংলগ্ন ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের পাশে পরিত্যক্ত অবস্থায় একটি স্যুটকেস পাওয়া যায়। স্থানীয় লোকজন ৯৯৯-এ কল দিলে, পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ওই স্যুটকেসের তালা ভেঙে ভেতর থেকে অজ্ঞাতনামা পুরুষের মরদেহ উদ্ধার করেন।
এ ঘটনায় কোতায়ালী থানার এসআই মো. শামীম হাসান বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ মামলায় পুলিশের একটি চৌকস টিম উন্নত তথ্য-প্রযুক্তি ও স্থানীয়ভাবে তদন্তের মাধ্যমে স্যুটকেস বহনকারী মাহিন্দ্রাসহ চালককে রাজবাড়ি জেলার গোয়ালন্দ ঘাট থানার গোয়ালন্দ বাজার থেকে আটক করে।
পরে মাহিন্দ্রাচালকের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে লাগেজ বহনকারী এক রিকশাচালককে নিয়ে গোয়ালন্দঘাট থানার পতিতাপল্লীতে অভিযান চালানো হয়। এরপর সোমবার দিবাগত রাত ৩টার সময় ডিএমপির কদমতলী থানার জুরাইন এলাকার দেওয়ানবাড়ির ৬ তলা থেকে হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি রোজিনা আক্তারকে গ্রেফতার করা হয়।
অভিযানে পুলিশ একটি ছাই রঙের লাগেজ, কালো রঙের একটি কম্বল, লাল-সাদা-বেগুনী রঙের একটি বড় বেডশিট ও একই রঙের ৩টি বালিশের কভার, একটি তালাসহ পেস্ট রঙের একটি ওড়না (যা হত্যার কাজে ব্যবহৃত) উদ্ধার করা হয়।
আসামি রোজিনা আক্তার ওরফে কাজল (৩২) লক্ষীপুর জেলার রামগতি থানার বাসিন্দা আবুল কাশেমর মেয়ে। তিনি রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দঘাট থানার এপি-দৌলতদিয়া পতিতাপল্লীতে (সাদ্দামের বাড়িতে) পরিবার নিয়ে ভাড়া থাকতেন।
এসময় মরদেহের পরিচয় জানিয়ে পুলিশ সুপার মো. মোর্শেদ আলম বলেন, নিহতের নাম মিলন প্রমাণিক (৩৯)। তিনি পাবনা সদর থানার নতুন গোহাইল গ্রামের কাশেম প্রমাণিকের ছেলে। তিনি রাজবাড়ী জেলায় বিভিন্ন ইটভাটায় কাজ করতেন।
তারই প্রেক্ষিতে তিনি যৌনপল্লীতেও যাতায়াত করতেন। গত ২৭ জানুয়ারি রাত আনুমানিক ২টায় আসামি রোজিনা আক্তারের সঙ্গে তার টাকা-পয়সা নিয়ে ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে রোজিনা আক্তার ক্ষিপ্ত হয়ে নিজের ওড়না গলায় পেঁচিয়ে মিলন প্রমাণিককে হত্যা করেন।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলেন চাকমা, কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসানুজ্জামান, ফরিদপুর জেলা পুলিশের কর্মকর্তাসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা।