মোঃ আরিফুল হাসান, (ফরিদপুর):
ফরিদপুরে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী রিতা আক্তারকে হত্যার দায়ে স্বামী আলমগীর হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
একই সঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০১লা ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ফরিদপুরের অতিরিক্ত দায়রা জজ ১ম আদালতের বিচারক অশোক কুমার দত্ত এ রায় ঘোষণা করেন। এসময় আলমগীর হোসেন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আলমগীর কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার খড়িবনা গ্রামের ইব্রাহিম হোসেনের ছেলে।
আরওপড়ুন …..
জানা যায়, ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার বিশ্বাস ডাঙ্গী গ্রামের কালাম মোল্লার মেয়ে রিতা আক্তারের (২৫) সঙ্গে ২০১২ সালের ১০ ডিসেম্বর কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার খড়িবনা গ্রামের ইব্রাহিম হোসেনের ছেলে আলমগীর হোসেনের পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়। বিবাহের পর তাদের পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করে। তার নাম রাহুল (৪)। এরপর আলমগীরের সঙ্গে রিতা আক্তারের পারিবারিক কলহের জেরে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।
এরপর ২০১৮ সালের ১৫ মার্চ রিতা আক্তার সদরপুর উপজেলার আলী আহম্মেদের ছেলে শাহজালালকে বিবাহ করেন। বিবাহের পর থেকে রিতা আক্তার তার ছেলে রাহুল (৪) ও স্বামী শাহজালালকে সঙ্গে নিয়ে চরভদ্রাসন উপজেলার বি এস ডাঙ্গী এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতে থাকেন।
গত ২০১৮ সালের ৯ এপ্রিল সন্ধ্যায় রিতা আক্তার ছেলে রাহুলকে নিয়ে চরভদ্রাসন বাজারে যায়। বাজারে গিয়ে সাবেক স্বামী আলমগীরের সঙ্গে দেখা হলে তাকে পুনরায় তার সাথে সংসার করতে বলে। এতে রিতা আক্তার রাজী না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে আলমগীর তাকে ছোরা দিয়ে কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যান।
পরে স্থানীয়রা রিতা আক্তারকে উদ্ধার করে চরভদ্রাসন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে তার শারিরীক অবস্থার অবনতি হলে রাতেই উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন মারা যান রিতা আক্তার।
এঘটনায় রিতা আক্তারের বর্তমান স্বামী মো. শাহাজালাল বাদী হয়ে ২০১৮ সালের ১০ এপ্রিল চরভদ্রাসন থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
অতিরিক্ত দায়রা জজ ১ম আদালতের এপিপি নওয়াব আলী মৃধা বলেন, ‘দীর্ঘ শুনানি শেষে রিতা আক্তারকে হত্যার দায়ে সাবেক স্বামী আলমগীর হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন অতিরিক্ত দায়রা জজ ১ম আদালতের বিচারক অশোক কুমার দত্ত। একই সঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। এ রায়ে আমরা খুশি।