হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার ১ নং ধর্মঘর ইউনিয়নের বৈষ্ণবপুর গ্রামে প্রতিবন্ধী দম্পতির নাবালক শিশুকে হাতে বেধে সিএনজির সাথে আটকে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে।
গত (২৭ মে) শনিবার সন্ধ্যায় ইউনিয়নের বৈষ্ণবপুর গ্রামের আসাদ আলী পীর সাহেবের বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়।
ভুক্তভোগী শিশুর মামা মোঃশামীম মিয়ার সাথে মুটোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,ঘটনার দিন সন্ধ্যায় আমি কাজীর বাজার আমার নিজের দোকানে বসা ছিলাম।হঠাৎ আমার প্রতিবন্ধী বোন দৌড়ে এসে আমাকে বলে তার ছেলেদেরকে ধরে নিয়ে গেছে।
পরে আমি দোকান থেকে মোটরসাইকেল যোগে ঘটনাস্থলে পৌছে দেখি বৈষ্ণবপুর গ্রামের আব্দুল হকের ছেলে আক্তার মিয়া(৩৫),মোক্তার মিয়া(৩২),জসিম মিয়া(২৮),ওয়াসিম মিয়া(১৮)সহ আরো বেশ কয়েকজন আমার (প্রতিবন্ধী দম্পতি)
বোনের দুই ছেলে আলামিন(৭) ও ইয়াসিনসহ একই গ্রামের আরো দুইজন হানিফ মিয়ার ছেলে শ্রবণ(৭),এবং সাচ্ছু মিয়ার ছেলে সাগর(৮)কে হাতে রসি দিয়ে বেধে সিএনজির সাথে আটক করে রেখেছে।
তাদেরকে কেনো বেধে রেখেছে জিঘাসা ও এই ঘটনার ভিডিও ধারন করতে গেলে আক্তার সহ উপস্থিত সকলে আমার উপর হামলা করে এবং মোবাইলে ধারন করা ভিডিও কাটতে বাধ্য করে।
আমার ভুক্তভোগী ভাগিনা আমাকে জানায় তাদেরকে মজা ও খেলনা কিনে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ভারত নিয়ে যাবে বলে তাদেরকে গাড়িতে তুলে ফেলে।পরে তারা যেতে না চাইলে হাতে বেধে সিএনজিতে আটক করে রাখে।
পরে আমি বাসায় ফিরে মোবাইল ব্যাকআপ দিয়ে ভিডিও ও ছবিগুলো ফেরত পাই। সাংবাদিকের হাতে পৌছা ঘটনার ভিডিও চিত্রে দেখা যায় চারজন শিশুকে হাতে রশি দিয়ে বেধে সিএনজির সাথে আটক করে রাখা হয়েছে।
এক ভিডিও চিত্রে ভুক্তভোগী শিশু ইয়াছিন বলে ,বিকাল বেলা রাস্তায় হাটতে ছিলাম তখন আক্তার মিয়া আমাদেরকে ইন্ডিয়া থেকে খেলনা ও মজা দিবে বলে সিএনজিতে উঠিয়ে নিয়ে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা আসাদ আলী সর্দার জানায়, বাক প্রতিবন্ধী দম্পতির শিশু ছেলেগুলো আক্তারের সিএনজির স্টেয়ারিং এর তার ছিড়ে ফেলায় তাদেরকে হাতে রশি দিয়ে বেধে আটক করা হয়।পরে আমি এসে বাক প্রতিবন্ধী পরিবারকে ২ হাজার টাকা জরিমানা করি।
ছেলেগুলোকে ছেড়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেই। এই বিষয়ে মাধবপুর সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃআশরাফ আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান,আমরা ঘটনা সম্পর্কে অবগত হয়েছি।
মাধবপুর থানায় এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে এবং শিশুদের প্রাথমিক কোন চিকিৎসার প্রয়োজন আছে কিনা সে বিষয়ে খোজ খবর নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারদেরকে অবগত করা হয়েছে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখার জন্য।
শিশুরা যাতে করে পরবর্তীতে কোন প্রকার আইনের আওতায় না আসে বা আইনি ঝামেলায় না পড়ে সে ব্যাপারে আমরা সতর্ক আছি। এই বিষয়ে কাশিমনগর ফাঁড়ির ইনচার্জ আরিফুল ইসলাম জানান,
শিশুগুলো আক্তার মিয়ার সিএনজি নষ্ট করায় তাদেরকে হাতে বেধে সিএনজিতে আটক করে রাখে যা একটি অপরাধ। ঘটনার পরেই আক্তার পলাতক আমরা অপরাধীকে গ্রেফতার করার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছি। ভুক্তভোগীর পক্ষ থেকে এখনো কেউ লিখিত কোন অভিযোগ দেয়নি।
অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবো। মাধবপুর থানার ওসি মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক জানান, ঘটনাস্থলে কাশিমনগর ফাঁড়ির ইনচার্জকে পাঠানো হয়েছে।অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।