বাহুবল প্রতিনিধি :
বাহুবল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ খলিলুর রহমান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহুয়া শারমিন ফাতেমার মধ্যে অর্ন্তদ্ব›দ্ব দেখা দিয়েছে। দায়িত্বশীল প্রধান ওই জনের মধ্যে সমন্বয়হীনতা থাকায় উন্নয়নমূলক কার্যক্রমে ঘটছে ব্যাঘাত ঘটছে।
তাছাড়া সাধারণ সভায় সদস্যদের অংশগ্রহণ না করায় থমকে রযেছে উপজেলা পরিষদের কার্যক্রম।
এদিকে, উপজেলা চেয়ারম্যান ও নির্বাহী কর্মকর্তার সমন্বয়হীতার কারণে উন্নয়ন মূলক কাজের পুকুর ঘাটলা, আভ্যন্তরীন আর সি সি রোড, বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল ও শহীদ মিনারে ওয়াকওয়ে মেরামত এবং ড্রেনেজ ব্যবস্থার জন্য সরকার কর্তৃক বরাদ্দের ২৪ লক্ষ টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, বাহুবল উপজেলা পরিষদের পুকুর ঘাটলা গুলো সত্তরের দশকে নির্মিত হয়। আশির দশকে এসে ঘাটলা গুলো ভেঙ্গে যায়। ফলে গোসল করতে আসা লোকজনরা আতংকে থাকেন।
সময়ে সময়ে উপজেলা প্রশাসন মেরামতের চেষ্টা করলেও অর্থ বরাদ্দ না থাকায় সম্ভব হয়ে উঠেনি। সম্প্রতি উপজেলা প্রশাসনের প্রচেষ্টায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে পুকুর ঘাটলা, অভ্যন্তরীন আরসিসি রোড, বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল ও শহীদ মিনারের ওয়াকওয়ে মেরামত বাবত ২৪ লক্ষ ১০ হাজার ৯৬৮ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।
২০২২-২৩ অর্থবছরের শেষের দিকে বরাদ্দ পত্রটি উপজেলা পরিষদের হস্তগত হয়। উপজেলা প্রকৌশলী এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাইলে কাজটি অনুমোদন দিলেও উপজেলা চেয়ারম্যান অনুমোদন দেননি। যে কারনে যথা সময়ে কাজ সম্পন্ন করা হয়নি। ফলে ওই বরাদ্দের কাজগুলো ফেরত যায়।
অন্যদিকে, গত তিন মাস ধরে উপজেলা পরিষদের সাধারণ সভা সিদ্ধান্তহীন ভাবে সমাপ্ত হচ্ছে। সাধারণ সভায় সদস্যদের অংশগ্রহণ না করায় উপজেলা পরিষদের কার্যক্রম থমকে রয়েছে। ভার্চুয়াল মিটিং আহ্বান করায় ভোটিং সদস্যরা অংশগ্রহণে অনীহা প্রকাশ করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেছেন।
উপজেলা পরিষদের সাধারণ সভার সদস্য রয়েছেন ২৮ জন। এর মধ্যে ১০ জন ভোটিং সদস্য। তারা হলেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান ও উপজেলার ৭টি ইউনয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণ।
নিয়মানুযায়ী উপজেলা চেয়ারম্যানের নোটে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রতি মাসে সভা আহ্বান করে থাকেন। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ভাচুয়ালি মিটিং আহ্বানের নোট দিয়ে আসছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা যথারিতি ভার্চুয়ালি মিটিং আহ্বান করে আসছেন। তবে ৭টি ইউনয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা ভার্চুয়াল ওই মিটিং-এ গত তিনমাস ধরে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত রয়েছেন।
ভোটিং এক সদস্য বলেন, ‘বিদ্যুৎ বিভ্রাট, নেটওয়ার্ক দুর্বলতার কারণে মিটিং-এ গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করা সম্ভব হয়ে উঠে না। করোনাকালীন সময়ে ভার্চুয়ালি মিটিং-এর নির্দেশনা থাকলেও বর্তমানে তা আর প্রয়োজন হচ্ছে না।
বর্তমানে উপজেলা পরিষদ-এর সকল মিটিং সরাসরি উপস্থিতির মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। ফলে সমন্বয় সভার মতো গুরুত্বপূর্ণ মিটিং সশরীরে উপস্থিতির মাধ্যমে আলোচনা করা একান্ত জরুরি।
এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যানরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এই আবেদন সম্পর্কে উপজেলা চেয়ারম্যানকে অবগত করলেও তিনি বিষয়টি আমলে নিচ্ছেন না।
ফলে গত তিন মাস ধরে উপজেলা পরিষদের সমন্বয় সভার গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো কোরাম অপূর্ণতায় আটকে আছে। উন্নয়নমূলক কার্যক্রমে দেখা দিয়েছে ব্যাঘাত।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাহুবল উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সৈয়দ খলিলুর রহমান বলেন, ‘এ সংক্রান্ত বরাদ্দের কোন খবর আমার জানা নেই’।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহুয়া শারমিন ফাতেমা বলেন, ‘উল্লেখিত বরাদ্দের মঞ্জুরীপত্র আমরা ২০২২-২৩ অর্থবছরের শেষের দিকে পেয়েছি। মঞ্জুরীপত্র পাওয়া এবং কাজ সমাপ্তির সময় ছিল অল্প।
এই অল্প সময়ের মধ্যে টেন্ডার দিয়ে কাজ সমাপ্তি কঠিন ছিল বিধায় আরএফকিউ-এর মাধ্যমে টেন্ডার দিয়ে কাজ সমাপ্তি করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের দপ্তরে ফাইল পাঠানো হলে যথাসময়ে ফেরত আসেনি। ফলে বরাদ্দকৃত অর্থ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ফেরত চলে যায়’।
আরও পড়ুন …