ক্রাইমসিন নিউজ ডেক্স :
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলা মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত কিশোর-কিশোরী ক্লাব প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। কিশোর-কিশোরী ক্লাবের সদস্য ও সংশ্লিষ্টদের জন্য নাস্তার বরাদ্দের টাকা আতœসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
কিশোর-কিশোরী ক্লাবের সদস্য এবং প্রকল্পের জেন্ডার প্রমোটর, কো-অর্ডিনেটরদের জানা যায়, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে হবিগঞ্জের মাধবপুরের ১১টি ইউনিয়ন এবং ১টি পৌরসভায় একটি করে কিশোর-কিশোরী ক্লাব প্রতিষ্ঠা করে শিশুদের আবৃতি ও সংগীত শিখানোসহ বিভিন্ন বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। ক্লাবের সদস্যদের নাস্তার জন্য শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রতিটি ক্লাবে ৩০ জনের জন্য ৩০ টাকা করে নাস্তার বরাদ্দ দেয়া হলেও ২০ টাকার নাস্তা সরবরাহ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন…..মৌলভীবাজার কারাগারে বিয়ে : এলাকায় চাঞ্চল্য
শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কম থাকলে তাদের বরাদ্দকৃত টাকা আতœসাত করা হয়েছে। বছরে দুইটি সভার জন্য বরাদ্দ থাকলেও তা করা হয়নি। এছাড়াও, কো-অর্ডিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করা মহিলা ইউপি সদস্যদের সম্মানীর টাকাও ঠিকমতো দেয়া হয়নি। আর এসব অভিযোগ বেশিরভাগই মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা পিয়ারা বেগমের বিরোদ্ধে। এছাড়া সরেজমিনে কয়েকটি ক্লাব পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায় উপস্থিতির হারও খুব কম। প্রতিটি কেন্দ্রে নাস্তা সরবরাহ করেন প্রকল্পে নিয়োগ প্রাপ্ত জেন্ডার প্রমোটররা। নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক জেন্ডার প্রমোটর জানান, প্রতিদিন ৩০ জনের জন্য ৩০ টাকা বরাদ্দ থাকলেও তাদেরকে অফিস থেকে ২০ টাকা করে দেয়া হয়েছে। সে জন্য কম মূল্যের খাবার সরবরাহ করেছেন তারা। জেন্ডার প্রমোটর বলেন,‘‘প্রতিদিন আমাকে একটি করে কেন্দ্রে যেতে হয়। তার জন্য ভাড়া বাবদ আমাকে কোন টাকা দেয়া হয় না।
আরও পড়ুন….রাবির নারীলোভী চরিত্রহীন ডা. রাজু আহমেদ এর প্রত্যাহার দাবিতে মানববন্ধন
ভাড়া বাবদও তো কিছু টাকা লাগে।” প্রতিটি ক্লাবের কো-অর্ডিনেটর হচ্ছে একজন নারী ইউ/পি সদস্য । তাদের সম্মানী হিসেবে প্রতি মাসে ২ হাজার টাকা করে বরাদ্দ রয়েছে। কিন্তু ইউপি সদস্যদেরকে দেয়া হয়েছে ৬ হাজার টাকা। ক্লাবের কো-অর্ডিনেটর চৌমুহনী ইউ/পি সদস্য রতœা আক্তার জানান,এ পর্যন্ত ৬ হাজার টাকা পেয়েছি আর কোন টাকা পাইনি । যোগাযোগ করা হলে বলে টাকা আসলে পাবেন।
এ ব্যাপারে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে মাধবপুর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা পিয়ারা বেগম বলেন,‘উপস্থিতির হার অনুযায়ী সবাইকে নাস্তা এবং সম্মানী বিতরণ করি। নাস্তার খরচ প্রত্যেককে ২০ টাকা দেওয়া হয়েছে আর ১০ টাকা করে রেখে ভ্যাট এবং হিসাব রক্ষন অফিসের খরচ বাবদ দেওয়া হয়। ১০ টাকা না রাখলে ভ্যাট আর হিসাবরক্ষন অফিসের খরচ কই থেকে দিমু? অন্যান্য আরও খরচ আছে। সেই টাকা কি আমার পকেট থেকে দিবো নাকি প্রকল্প থেকে দিবো?”কো-অর্ডিনেটরদের ভাতা করোনাকালীন সময় থেকে আজ পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে । একবার তাদের ভাতা পেয়েছি বিতরনও করেছি। চৌমুহনী কিশোর কিশোরী ক্লাবের গানের শিক্ষক সঞ্জয় দত্ত জানান, ‘‘নিয়মিত শিক্ষার্থীদের আবৃত্তি ও গান শেখানো হয়।
প্রকল্পের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হচ্ছে। অনেক কিছু শিখতে পারছে। শিক্ষার্থীদের নাস্তার খরচ ২০ টাকা করে দেওয়া হয়।মাধবপুর উপজেলা হিসাবরক্ষন কর্মকর্তা মো. জসীম উদ্দিন বলেন,আমাদের অফিসে বিল তুলতে কোন রকম টাকা লাগেনা । আমাদের অফিসে কিশোর কিশোরী ক্লাবের নাস্তার বরাদ্ধের টাকা থেকে টাকা কেটে রাখার অভিযোগ মিথ্যা।
মাধবপুর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মনজুর আহসান বলেন,বিষয়টি আমি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।