স্টাফ রিপোর্টার :
পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার শেরপুরের পশ্চিমের মাঠে ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলা শুরু হয়েছে আজ থেকে।;
বাংলা পৌষ মাসের শেষের দিন এই উৎসব পালন করা হয়। এই দিন বাঙালিরা বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন করে থাকে। তার মধ্যে পিঠা খাওয়া, ঘুড়ি উড়ানো অন্যতম। তারই ধারাবাহিকতায় প্রায় ২০০ বছর ধরে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে এই মাছের মেলা।;
প্রতি বছরে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসা মানুষ মূলত আসেন মাছ কেনার জন্য। এই মেলা বাঙালির সংস্কৃতির সাথে জড়িয়ে আছে। মেলায় বড়,মাঝারি এবং ছোট সাইজের বিভিন্ন রকমের প্রজাতির মাছ বিক্রি করে থাকেন মৎস্য ব্যবসায়ীরা। মাছের পাশাপাশি বিশেষ করে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র যেমন- নকশীকাঁথা,শীতলপাটি এবং কাঠের তৈরি হরেকরকমের জিনিসপত্র পাওয়া যায়। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে বিক্রেতারা বাচ্চাদের খেলনা, টাঙ্গাইলের জনপ্রিয় জামদানী শাড়ি, বগুড়ার দই ইত্যাদি নিয়ে আসেন বিক্রি করার জন্য। এবারের মাছের মেলা হবে ২ দিন ব্যাপী।
এই মেলা উপলক্ষে আশেপাশের মানুষের জন্য খুশির দিনে পরিণত হয়েছে। কেননা অনেক বেকারের টাকা আয় করার উৎস এই মেলা থেকে। গাড়ির পার্কিং দিয়েও লক্ষাধিক টাকা উপার্জন করেন স্থানীয়রা। ব্যবসা করার জন্য প্রস্তুত শেরপুরসহ পাশ্ববর্তী অঞ্চলের মানুষ। এদিকে সরকার বাজারের মাছ ব্যবসায়ী এবং হোটেল ব্যবসায়ীদের আশ্বাস ভালো বেচাকেনা হবে। প্রতিবছর একবার এই দিন আসে আর এই দিনে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করেন স্থানীয় বাসিন্দারা থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন জায়গার মানুষ। এদিকে প্রবাসীরাও দেশে এসেছেন বড় মাছ কেনার জন্য।
তবে এবারের মেলা পূর্বের থেকে ভিন্ন হতে পারে। পূর্বে মেলায় জুয়া খেলা, পুতুল নাচ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকান্ড হতো তবে এবারে সেটা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য উজ্জ্বল আহমদ।
উজ্জ্বল আহমদ বলেন- এবছর মেলার ইজারা মূল্য ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা এবং আনুমানিক ১৫০০ দোকান দেওয়ার জন্য প্রস্তুত ব্যবসায়ীরা। এবারের মেলা শান্তিপূর্ণ হবে এবং মেলায় যথাযথ প্রশাসনের সহযোগিতা থাকবে। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না। মাছ সর্বমোট কত টাকার বিক্রি হতে পারে জানতে চাইলে বলেন ক্রেতা এবং বিক্রেতার উপর নির্ভর করে বেচাকেনা। তবে সবমিলিয়ে প্রায় ২০ কোটি টাকার মাছ বিক্রি হতে পারে।
হামরকোনা গ্রামের বাসিন্দা মোহন বলেন- সর্বস্তরের মানুষকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি মেলায় ঘুরতে আসার জন্য এবং উপভোগ করার জন্য।
সরকার বাজারের ব্যবসায়ী সুয়েব বলেন- এই মেলা আমাদের মৌলভীবাজারবাসীর জন্য ঐতিহ্য। এই মেলায় আগত ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা।
মূলত পৌষসংক্রান্তি ও নবান্ন উৎসব উপলক্ষে সদর উপজেলার সত্রস্বতী পরগনার সাধুহাটি গ্রামের জমিদার রাজেন্দ্রনাথ দাম (মথুর বাবু) কুশিয়ারা তীরবর্তী তৎকালীন বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক স্থল মনুমুখে এ মেলার প্রচলন করেছিলেন প্রায় দুইশত বছর আগে।
Subscribe to get the latest posts sent to your email.